আখেরী মুনাজাত ও অন্যান্য দু'আ মনির হুসাইনের বিশ্ব ইজতেমা বিরুধী পোস্টের জবাব ০১
আখেরী মুনাজাত ও অন্যান্য দু'আ মনির হুসাইনের বিশ্ব ইজতেমা বিরুধী পোস্টের জবাব ০১
তার আগে মনিরের পোস্টের লিঙ্কটা দেখে নিন ।
https://m.facebook.com/photo.php?fbid=10152993809694933&id=780324932&set=a.10150270806659933.347773.780324932&source=48&fs=4&ref=m_notif¬if_t=photo_comment_tagged
(হয়তো লিংক টা এখন কাজ নাও করতে পারে)
আমি এই পোস্টের ২ খণ্ডে দিব আজ তার ১ম খণ্ড
মনির হুসাইন সাহেব বলেছেন আমাদের দেশে প্রতি বৎসর দু’টি স্থানে দু’টি বড় অনুষ্ঠান মহাসমারোহে পালিত হয়। একটি হল বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে আর একটি হল বিশ্ব ইজতেমায়। এক মঞ্জিলে বড় বড় বিত্তবান বা মালদার সওদাগর নিজেরা গরু, ছাগল, উট নিয়ে ওরস করতে যায়। অন্য মঞ্জিলে বড় ছোট সব ধরনের লোকেরা গাট্ঠি-বোচকা নিয়ে এজতেমা করতে যায়। এর একটায় করতে যায় জেকের আর একটায় করতে যায় ফেকের। একটায় করতে যায় আখিরী মুনাজাত আর একটায় করতে যান আখিরী মুলাকত। আমরা জানি আখিরী মানে শেষ কিন্তু তাদের আখিরী মুলাকাত ও মুনাজাত কবে শেষ হবে আল্লাহই ভাল জানেন।
জনাব ,খুব ভাল বলেছেন তবে কেমন জানি একটু বেখাপ্পা লাগছে । আপনি তাহরিকে ইমানের ইজতেমা কে একটি বন্ড বাতিল গুমরাহ দলের সাথে মিলিয়ে ফেলেছেন ।তাহলে কি তাহলে
وَلاَ تَلْبِسُواْ الْحَقَّ بِالْبَاطِلِ وَتَكْتُمُواْ الْحَقَّ وَأَنتُمْ تَعْلَمُونَ তোমরা সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশিয়ে দিও না এবং জানা সত্ত্বে সত্যকে তোমরা গোপন করো না। (সূরাঃ আল-বাক্বারাহ ২/৪২)
এই আয়াতের বিরুধীতা করলেন না !!! আট রশী সর্বসম্মতি ক্রমে গুমরাহ দল আর তাবলীগ জামাত ইহা আপনাদের মত কিছু বাংলিস ফিতনাবাজের কাছে ।যদি নাই হত তাহলে আপনার মত একজন ফুসকে জ্ঞানীর বিরুধীতা করার দ্বারা কি তাহরিকে ইমানের টঙ্গী তুরাগ নদীর তীরের মুসল্লীদের জন্স্রুত ঠেকাতে পেরেছেন ????
আপনার বিশ্ব ইজতেমা বিরুধী পোস্ট বিরান মরু ভুমিতে একফুটা পানির জন্য তৃষ্ণার্ত চাতকের ন্যায় চিৎকার করা । কিন্তু আপনার এই চিৎকার শুধু বালির কনা ছাড়া আর কেহ শুনবে না
ঠিক তেমনি আপনার কথা আপনার মত কিছু ফুসকে লেজকাটা ইদুরেরাই অনুসরণ করবে ।
আপনি ""বলেছেন অন্যদিকে জাহিল লোকদের মুখে শুনা যায় টঙ্গীতে আখিরী মুনাজাতে অংশ নিলে নাকি তামাম জিন্দেগীর গুনাহ মাফ হয়ে যায় এবং তিনবার অংশগ্রহণ করলে নাকি হজ্জের সাওয়াব পাওয়া যায় (নাউযুবিল্লাহ)।""
আচ্ছা মনির সাহেব আপনি কার কাছে এমন কথা পেয়েছেন অথচ এমন কোন আমারা এখনও শুনে নি যার কাছে শুনেছেন তার কোন মোবাইল নং থাকলে জানান ।এমন মন গড়া কথা শুধু আপনাদের মত ফিতনাবাজেরই মানাই ভাই আমি বলি আপনি এসব না করে তওবাহ করে সঠিক পথে আসুন ।আপনি কিছুই করতে পারবেননা ।
আপনি বলেছেন ""যাই হোক আমরা এখন আলোচনা করব কুরআন হাদীসের দৃষ্টিতে তাবলীগী জামা‘আরেত আখেরী মুনাজাত ও অন্যান্য দু‘আ নিয়ে যা তারা করে থাকে তা কতটুকু শরী‘আত সম্মত। প্রচলিত সলাতের পর গাশতের জন্য বের হবার সময় তালীম শেষে, বয়ান শেষে ও বিশ্ব ইজতেমায় শেষ দিনের দু‘আকে এর সমর্থক কথিত আলিমগণ ও জাহিলরা মুনাজাত বলে থাকে। নামকরণের দিক থেকেও এ কাজটি বিদ‘আত। কারণ মুনাজাত বলা হয় দুই বা ততোধিক জনের এমন গোপন কথোপকথনকে যা অন্য আর কেউ শুনবে না ও জানবে না। আরবী সর্ববৃহৎ অভিধান ‘লিসানুল আরবে’مَا يَكُونُ مِن نَّجْوَى ثَلَاثَةٍ إِلاَّ هُوَ رَابِعُهُمْ ‘তিনজনের গোপন পরামর্শ (কথোপকথন) হলে সেখানে আল্লাহ চতুর্থজন থাকেন’।
আমি এখানে ২ ভাবে বাগ করব ১/ মুনাজাত শব্দের উৎপত্তি ২/সম্মেলিত ভাবে মুনাজাত শরয়ী আলোচনা ।তার আগে আমি মুনাজাতের কিছু প্রাসঙ্গিক আলোচনা তুলে ধরছি ।যার দ্বারা বিষয়টি সম্পূর্ণ বুঝে আসবে ।
দুয়া মুনাজাতের আদব সমুহসৃষ্টিকর্তা প্রতিপালক আল্লাহর সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক কিভাবে স্থাপিত হতে পারে? মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতে কোনো রকম মুখাপেক্ষী নন। তিনি সকল সৃষ্টিজীব থেকে অমুখাপেক্ষী। সকল বিষয়ে সর্বশক্তিমান। তিনি মহা শক্তির অধিকারী, তাঁর ওপর কেউ বিজয়ী হতে পারে না। আকাশমণ্ডল ও তাবৎ জগতের প্রতিটি বিষয় তাঁর আয়ত্বাধীন। তাই মানুষ তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে, তাঁর কাছে নিজের প্রয়োজন প্রার্থনা করতে, বিপদ থেকে উদ্ধার পেতে সর্বদা তাঁর কাছেই মুখাপেক্ষী। তিনি কারীম-মহান। তাঁর কাছে প্রার্থনা করলে তিনি খুশি হন। তিনি ভালবাসেন, মানুষ তাঁর কাছে তাদের প্রয়োজনীয় সবকিছু চেয়ে নেবে। তিনি তাদের প্রার্থনা কবুল করেন।দুআ কাকে বলে? কিভাবে করতে হয়? কখন করা উচিত? দুআ কবুলের অন্তরায় কী? ইত্যাদি বিষয়গুলো কুরআন ও বিশুদ্ধ সুন্নাহর আলোকে আলোচনা করা হয়েছে ।দুআ দুই প্রকারএক. দুআউল ইবাদাহ বা উপাসনা মূলক দুআ। সকল প্রকার ইবাদতকে এ অর্থে দুআ বলা হয়। দুই. দুআউল মাছআলা অর্থাৎ প্রার্থনাকারী নিজের জন্য যা কল্যাণকর তা চাবে এবং যা ক্ষতিকর তা থেকে মুক্তি প্রার্থনা করবে। ( ইবনুল কায়্যিম)যেমন কেউ সালাত আদায় করল। এবং সালাতের মধ্যে অনেক প্রার্থনামূলক বাক্য ছিল। এগুলোই দুআউল ইবাদাহ বা উপাসনামূলক প্রার্থনা। আবার সে পরীক্ষা দেবে। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করল হে আল্লাহ! তুমি আমার পরীক্ষা সহজ করে দাও এবং কৃতকার্য করে দাও! এটা হল দুআ আল-মাছআলা বা চাওয়া।দুআ ও প্রার্থনার ফযীলত ১- দুআ এক মহান ইবাদত আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন, তোমাদের প্রতিপালক বলেন, তোমরা আমার কাছে প্রার্থনা কর, আমি তোমাদের প্রার্থনা কবুল করব। যারা অহংকারবশত আমার ইবাদত হতে বিমুখ তারা অবশ্যই জাহান্নামে প্রবেশ করবে লাঞ্ছিত হয়ে। (আল-মুমিন : ৬০)
এ আয়াতে প্রমাণিত হল, যারা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে না তারা অহংকারী। অতএব প্রার্থনা করলে অহংকার থেকে মুক্ত থাকা যাবে।ইমাম শাওকানী রহ. বলেন : এ আয়াত স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে দুআ অন্যতম ইবাদত। আর এটা পরিহার করা আল্লাহর সঙ্গে অহংকার করার নামান্তর। এ অহংকারের চেয়ে নিকৃষ্ট কোনো অহংকার হতে পারে না। কিভাবে মানুষ আল্লাহর সঙ্গে অহংকার করতে পারে যে আল্লাহ তাকে সৃষ্টি করেছেন, তাকে সব ধরনের জীবনোপকরণ দিয়েছেন, যিনি জীবন দান করেন ও মৃত্যু ঘটান এবং ভাল-মন্দের প্রতিদান দিয়ে থাকেন ? (তুহফাতুয যাকিরীন : আশ-শাওকানী) ৩-দুআ কখনো বৃথা যায় না যেমন হাদীসে এসেছে :আবু সাঈদ খুদরী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : যখন কোনো মুমিন ব্যক্তি দুআ করে, যে দুআতে কোনো পাপ থাকে না ও আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার বিষয় থাকে না, তাহলে আল্লাহ তিন পদ্ধতির কোনো এক পদ্ধতিতে তার দুআ অবশ্যই কবুল করে নেন। যে দুআ সে করেছে হুবহু সেভাবে তা কবুল করেন অথবা তার দুআর প্রতিদান আখেরাতের জন্য সংরক্ষণ করেন কিংবা এ দুআর মাধ্যমে তার ওপর আগত কোনো বিপদ তিনি দূর করে দেন। এ কথা শুনে সাহাবিগণ বললেন, আমরা তাহলে অধিক পরিমাণে দুআ করতে থাকবো। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন : তোমরা যত প্রার্থনাই করবে আল্লাহ তার চেয়ে অনেক বেশি কবুল করতে পারেন। (বুখারী : আল-আদাবুল মুফরাদ ও আহমদ)এ হাদীসে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে কোনো মুসলিম ব্যক্তির দুআ কখনো বৃথা যায় না। দুআ ও মুনাজাতের আদবআপনি দেখবেন কোনো মানুষ যখন কারো কাছে কিছু চায় তখন আদব-কায়দা বা শিষ্টাচারের সঙ্গেই তা চায়। সে নিজের কথা সুন্দর করে, উপস্থপনা পদ্ধতি আকর্ষণীয় করার চেষ্টা করে। এমনিভাবে দরখাস্ত যত গুরুত্বপূর্ণ হবে তার আদব ও উপস্থাপনা ততই সুন্দর ও মার্জিত করা হয়। এ সকল প্রচেষ্টার উদ্দেশ্য একটাই থাকে, তাহল, সে যা আবেদন করেছে তা যেন পায়।আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের চেয়ে এমন বড় সত্তা কে আছে যার কাছে আদব-কায়দা ও পূর্ণ শিষ্টাচারসহ প্রার্থনা করা যেতে পারে? অপরদিকে দুআ-মুনাজাত যখন সর্বশ্রেষ্ট ইবাদত তখন অবশ্যই এটা আদায় করতে তার যত বিধি-বিধান, শর্তাবলী, নিয়ম-কানুন, শিষ্টাচার আছে, তার সবই পালন করতে হবে। লক্ষ্য থাকবে যে, আমার এ প্রার্থনা যেন আল্লাহর কাছে কবুল হয়।প্রার্থনার একটি শর্ত হল, এটা শুধুমাত্র আল্লাহর কাছে ও তাঁরই উদ্দেশ্যে নিবেদিত হবে। আল্লাহর সঙ্গে দুআর সময় অন্য কোনো কিছুকে অংশীদার করা যাবে না। যেমন করে থাকে খ্রিস্টান ও মুশরিকরা। তারা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করতে যেয়ে যিশু ও অন্যান্য দেব-দেবীকে আহ্বান করে। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন :এবং এ মসজিদসমূহ আল্লাহর জন্য। সুতরাং আল্লাহর সঙ্গে তোমরা অন্য কাউকে ডাকবে না। (আল-জিন : ১৮) আল্লাহ তাআলা আরো বলেন :বল, তোমরা ভেবে দেখ যে, আল্লাহর শাস্তি তোমাদের ওপর আপতিত হলে অথবা তোমাদের নিকট কিয়ামত উপস্থিত হলে তোমরা কি আল্লাহ ব্যতীত অন্য কাউকে ডাকবে, যদি তোমরা সত্যবাদী হও? (আল-আনআম: ৪০) যখন বিপদকালে আমরা তাকে ছাড়া অন্য কাউকে ডাকি না তখন নিরাপদ সময়ে তাকে ছাড়া অন্যকে ডাকব কেন, বিপদের সময় যিনি একাই সাহায্য করতে পারেন তিনি কি অন্য সময় একা সাহায্য করতে পারেন না? তাহলে তখন কেন তার সঙ্গে অন্যকে শরীক করা হবে?আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন :আল্লাহ ব্যতীত তোমরা যাদের আহ্বান কর তারা তো তোমাদেরই মত বান্দা। (আল-আরাফ : ১৯৪) আল্লাহ আরো বলেন :আল্লাহ ব্যতীত তোমরা যাকে আহ্বান কর তারা তো তোমাদের সাহায্য করতে পারে না এবং নিজেদেরও নয়। (আল-আরাফ : ১৯৭) এ সকল আয়াতে আল্লাহ ব্যতীত কথাটি দ্বারা ওই সকল বস্তু ও ব্যক্তিকে বুঝানো হয়েছে যাদের কাছে প্রার্থনা করা হয়। হোক তা গাছ-পালা, পাহাড়-পর্বত, চাঁদ-সূর্য, আগুন, নবী, অলী, পীর, দেব-দেবী ও প্রতিমা ইত্যাদি।রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর চাচাতো ভাই ইবনে আব্বাস রা. কে নছীহত করেছিলেন :হে খোকা! আমি তোমাকে কয়েকটি কথা শিক্ষা দেব : আল্লাহকে হেফাজত কর আল্লাহ তোমাকে রক্ষা করবেন। আল্লাহকে হেফাজত কর, তুমি তাকে সামনে পাবে। যখন প্রার্থনা করবে তখন আল্লাহর কাছেই প্রার্থনা করবে। যখন সাহায্য কামনা করবে তখন আল্লাহর কাছেই সাহায্য চাবে। জেনে রাখ! পুরো জাতি যদি তোমাকে উপকার করতে একত্র হয় তবুও তোমার কোনো উপকার করতে পারবে না, তবে আল্লাহ তোমার জন্য যা লিখে রেখেছেন। এমনিভাবে পুরো জাতি যদি তোমার ক্ষতি করার জন্য একত্র হয় তবুও তোমার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না, তবে আল্লাহ যা তোমার বিপক্ষে লিখে রেখেছেন। কলম উঠিয়ে নেয়া হয়েছে আর দফতর শুকিয়ে গেছে। (তিরমিজী) প্রার্থনাকারীকে রিয়া অর্থাৎ লোকদেখানো ভাবনা ও ছুমুআ অর্থাৎ সমাজে প্রচার ভাবনা থেকে সর্বদা মুক্ত থাকতে হবে। দুআ নিবেদন হতে হবে কেবলই আল্লাহর উদ্দেশ্যে।রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেই দিয়েছেন :যে মানুষকে শুনানোর জন্য কাজ করল আল্লাহ তা মানুষকে শুনিয়ে দেবেন। আর যে মানুষকে দেখানোর জন্য কাজ করল আল্লাহ তা মানুষকে দেখিয়ে দেবেন। (ফলে সে আল্লাহর কাছে এর কোনো বিনিময় পাবে না।) (বুখারী) দুআ করার আদবসমূহ ১- দুআ করার সময় তা কবুল হওয়ার ব্যাপারে এ দৃঢ় বিশ্বাস রাখা এবং দৃঢ়তার সঙ্গে দুআ করা :যদি আল্লাহ সম্পর্কে যথার্থ জ্ঞান থাকে তাঁর কুদরত, মহত্ত্ব, ওয়াদা পালনের প্রতি ঈমান থাকে তাহলে এ বিষয়টা আয়ত্ব করা সহজ হবে। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন :তোমাদের কেউ এ রকম বলবে না : হে আল্লাহ আপনি যদি চান তাহলে আমাকে ক্ষমা করে দিন। যদি আপনি চান তাহলে আমাকে অনুগ্রহ করুন। যদি আপনি চান তাহলে আমাকে জীবিকা দান করুন। বরং দৃঢ়তার সঙ্গে প্রার্থনা করবে এবং মনে রাখবে তিনি যা চান তা-ই করেন, তাকে কেউ বাধ্য করতে পারে না। (বুখারী) অর্থাৎ আল্লাহ যা ইচ্ছে করেন তা-ই করে থাকেন। তাই এভাবে প্রার্থনা বা মুনাজাত করার কোনো স্বার্থকতা নেই যে, আপনি চাইলে করেন। ঠিক এমনিভাবে তার কাছে দৃঢ়তার সঙ্গে প্রার্থনা করলে তাকে বাধ্য করা হয় না। কেননা তাকে কেউ বাধ্য করতে পারে না। এটা প্রার্থনাকারীসহ সকলে জানে।রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেন : প্রার্থনা কবুল হবে এ দৃঢ় বিশ্বাস রেখে তোমরা প্রার্থনা করবে। এবং জেনে রাখ আল্লাহ কোনো উদাসীন অন্তরের প্রার্থনা কবুল করেন না। (তিরমিজী, হাকেম) ২-বিনয় ও একাগ্রতার সঙ্গে দুআ করা এবং আল্লাহর অনুগ্রহ লাভ ও তার শাস্তি থেকে বাঁচার প্রবল আগ্রহ নিয়ে দুআ করা :আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন :তোমরা বিনীতভাবে ও গোপনে তোমাদের প্রতিপালকের কাছে দুআ করবে। (আল-আরাফ : ৫৫) আল্লাহ তাআলা বলেন : তারা সৎকর্মে প্রতিযোগিতা করে ও তারা আমার কাছে প্রার্থনা করে আশা ও ভীতির সঙ্গে এবং তারা থাকে আমার নিকট বিনীত। (আল-আম্বিয়া : ৯০) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুআর সময় বিনয়, ভীতি ও আশা নিয়ে কিভাবে দুআ করতেন তার একটি ছোট দৃষ্টান্ত এ হাদীসে দেখা যায় :আব্দুল্লাহ বিন আমর রা. থেকে বর্ণিত যে, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইবরাহীম আ. এর দুআ সম্পর্কে কুরআনের এ আয়াতটি তেলাওয়াত করলেন, হে আমার প্রতিপালক! এ সকল প্রতিমা তো বহু মানুষকে বিভ্রান্ত করেছে। সুতরাং যে আমার অনুসরণ করবে সে আমার দলভুক্ত।’ এবং তিনি ঈসা আ. এর দুআ সম্পর্কিত কুরআনের এ আয়াতটিও তেলাওয়াত করলেন, ‘তুমি যদি তাদের শাস্তি দাও তবে তারা তো তোমারই বান্দা, আর যদি তাদেরকে ক্ষমা কর, তবে তুমি তো পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।’ তিনি দু’হাত উপরে তুললেন এবং বললেন, ‘হে আল্লাহ! আমার উম্মত! আমার উম্মত!!’ এবং তিনি কাঁদলেন। আল্লাহ বললেন, হে জিবরীল! তুমি মুহাম্মাদের কাছে যাও, জিজ্ঞেস কর-অবশ্য তোমরা প্রভু ভাল জানেন- তাকে কিসে কাঁদিয়েছে। জিবরীল আসলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বললেন তার কাঁদার কারণ -আল্লাহ তো অবশ্যই জানেন-। আল্লাহ বললেন, হে জিবরীল, তুমি মুহাম্মদের কাছে যাও এবং বল, আমি অবশ্যই তার উম্মতের ব্যাপারে তাকে সন্তুষ্ট করব, তাকে এ ব্যাপারে অসম্মান করব না। (মুসলিম)
তার আগে মনিরের পোস্টের লিঙ্কটা দেখে নিন ।
https://m.facebook.com/photo.php?fbid=10152993809694933&id=780324932&set=a.10150270806659933.347773.780324932&source=48&fs=4&ref=m_notif¬if_t=photo_comment_tagged
(হয়তো লিংক টা এখন কাজ নাও করতে পারে)
আমি এই পোস্টের ২ খণ্ডে দিব আজ তার ১ম খণ্ড
মনির হুসাইন সাহেব বলেছেন আমাদের দেশে প্রতি বৎসর দু’টি স্থানে দু’টি বড় অনুষ্ঠান মহাসমারোহে পালিত হয়। একটি হল বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে আর একটি হল বিশ্ব ইজতেমায়। এক মঞ্জিলে বড় বড় বিত্তবান বা মালদার সওদাগর নিজেরা গরু, ছাগল, উট নিয়ে ওরস করতে যায়। অন্য মঞ্জিলে বড় ছোট সব ধরনের লোকেরা গাট্ঠি-বোচকা নিয়ে এজতেমা করতে যায়। এর একটায় করতে যায় জেকের আর একটায় করতে যায় ফেকের। একটায় করতে যায় আখিরী মুনাজাত আর একটায় করতে যান আখিরী মুলাকত। আমরা জানি আখিরী মানে শেষ কিন্তু তাদের আখিরী মুলাকাত ও মুনাজাত কবে শেষ হবে আল্লাহই ভাল জানেন।
জনাব ,খুব ভাল বলেছেন তবে কেমন জানি একটু বেখাপ্পা লাগছে । আপনি তাহরিকে ইমানের ইজতেমা কে একটি বন্ড বাতিল গুমরাহ দলের সাথে মিলিয়ে ফেলেছেন ।তাহলে কি তাহলে
وَلاَ تَلْبِسُواْ الْحَقَّ بِالْبَاطِلِ وَتَكْتُمُواْ الْحَقَّ وَأَنتُمْ تَعْلَمُونَ তোমরা সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশিয়ে দিও না এবং জানা সত্ত্বে সত্যকে তোমরা গোপন করো না। (সূরাঃ আল-বাক্বারাহ ২/৪২)
এই আয়াতের বিরুধীতা করলেন না !!! আট রশী সর্বসম্মতি ক্রমে গুমরাহ দল আর তাবলীগ জামাত ইহা আপনাদের মত কিছু বাংলিস ফিতনাবাজের কাছে ।যদি নাই হত তাহলে আপনার মত একজন ফুসকে জ্ঞানীর বিরুধীতা করার দ্বারা কি তাহরিকে ইমানের টঙ্গী তুরাগ নদীর তীরের মুসল্লীদের জন্স্রুত ঠেকাতে পেরেছেন ????
আপনার বিশ্ব ইজতেমা বিরুধী পোস্ট বিরান মরু ভুমিতে একফুটা পানির জন্য তৃষ্ণার্ত চাতকের ন্যায় চিৎকার করা । কিন্তু আপনার এই চিৎকার শুধু বালির কনা ছাড়া আর কেহ শুনবে না
ঠিক তেমনি আপনার কথা আপনার মত কিছু ফুসকে লেজকাটা ইদুরেরাই অনুসরণ করবে ।
আপনি ""বলেছেন অন্যদিকে জাহিল লোকদের মুখে শুনা যায় টঙ্গীতে আখিরী মুনাজাতে অংশ নিলে নাকি তামাম জিন্দেগীর গুনাহ মাফ হয়ে যায় এবং তিনবার অংশগ্রহণ করলে নাকি হজ্জের সাওয়াব পাওয়া যায় (নাউযুবিল্লাহ)।""
আচ্ছা মনির সাহেব আপনি কার কাছে এমন কথা পেয়েছেন অথচ এমন কোন আমারা এখনও শুনে নি যার কাছে শুনেছেন তার কোন মোবাইল নং থাকলে জানান ।এমন মন গড়া কথা শুধু আপনাদের মত ফিতনাবাজেরই মানাই ভাই আমি বলি আপনি এসব না করে তওবাহ করে সঠিক পথে আসুন ।আপনি কিছুই করতে পারবেননা ।
আপনি বলেছেন ""যাই হোক আমরা এখন আলোচনা করব কুরআন হাদীসের দৃষ্টিতে তাবলীগী জামা‘আরেত আখেরী মুনাজাত ও অন্যান্য দু‘আ নিয়ে যা তারা করে থাকে তা কতটুকু শরী‘আত সম্মত। প্রচলিত সলাতের পর গাশতের জন্য বের হবার সময় তালীম শেষে, বয়ান শেষে ও বিশ্ব ইজতেমায় শেষ দিনের দু‘আকে এর সমর্থক কথিত আলিমগণ ও জাহিলরা মুনাজাত বলে থাকে। নামকরণের দিক থেকেও এ কাজটি বিদ‘আত। কারণ মুনাজাত বলা হয় দুই বা ততোধিক জনের এমন গোপন কথোপকথনকে যা অন্য আর কেউ শুনবে না ও জানবে না। আরবী সর্ববৃহৎ অভিধান ‘লিসানুল আরবে’مَا يَكُونُ مِن نَّجْوَى ثَلَاثَةٍ إِلاَّ هُوَ رَابِعُهُمْ ‘তিনজনের গোপন পরামর্শ (কথোপকথন) হলে সেখানে আল্লাহ চতুর্থজন থাকেন’।
আমি এখানে ২ ভাবে বাগ করব ১/ মুনাজাত শব্দের উৎপত্তি ২/সম্মেলিত ভাবে মুনাজাত শরয়ী আলোচনা ।তার আগে আমি মুনাজাতের কিছু প্রাসঙ্গিক আলোচনা তুলে ধরছি ।যার দ্বারা বিষয়টি সম্পূর্ণ বুঝে আসবে ।
দুয়া মুনাজাতের আদব সমুহসৃষ্টিকর্তা প্রতিপালক আল্লাহর সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক কিভাবে স্থাপিত হতে পারে? মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতে কোনো রকম মুখাপেক্ষী নন। তিনি সকল সৃষ্টিজীব থেকে অমুখাপেক্ষী। সকল বিষয়ে সর্বশক্তিমান। তিনি মহা শক্তির অধিকারী, তাঁর ওপর কেউ বিজয়ী হতে পারে না। আকাশমণ্ডল ও তাবৎ জগতের প্রতিটি বিষয় তাঁর আয়ত্বাধীন। তাই মানুষ তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে, তাঁর কাছে নিজের প্রয়োজন প্রার্থনা করতে, বিপদ থেকে উদ্ধার পেতে সর্বদা তাঁর কাছেই মুখাপেক্ষী। তিনি কারীম-মহান। তাঁর কাছে প্রার্থনা করলে তিনি খুশি হন। তিনি ভালবাসেন, মানুষ তাঁর কাছে তাদের প্রয়োজনীয় সবকিছু চেয়ে নেবে। তিনি তাদের প্রার্থনা কবুল করেন।দুআ কাকে বলে? কিভাবে করতে হয়? কখন করা উচিত? দুআ কবুলের অন্তরায় কী? ইত্যাদি বিষয়গুলো কুরআন ও বিশুদ্ধ সুন্নাহর আলোকে আলোচনা করা হয়েছে ।দুআ দুই প্রকারএক. দুআউল ইবাদাহ বা উপাসনা মূলক দুআ। সকল প্রকার ইবাদতকে এ অর্থে দুআ বলা হয়। দুই. দুআউল মাছআলা অর্থাৎ প্রার্থনাকারী নিজের জন্য যা কল্যাণকর তা চাবে এবং যা ক্ষতিকর তা থেকে মুক্তি প্রার্থনা করবে। ( ইবনুল কায়্যিম)যেমন কেউ সালাত আদায় করল। এবং সালাতের মধ্যে অনেক প্রার্থনামূলক বাক্য ছিল। এগুলোই দুআউল ইবাদাহ বা উপাসনামূলক প্রার্থনা। আবার সে পরীক্ষা দেবে। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করল হে আল্লাহ! তুমি আমার পরীক্ষা সহজ করে দাও এবং কৃতকার্য করে দাও! এটা হল দুআ আল-মাছআলা বা চাওয়া।দুআ ও প্রার্থনার ফযীলত ১- দুআ এক মহান ইবাদত আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন, তোমাদের প্রতিপালক বলেন, তোমরা আমার কাছে প্রার্থনা কর, আমি তোমাদের প্রার্থনা কবুল করব। যারা অহংকারবশত আমার ইবাদত হতে বিমুখ তারা অবশ্যই জাহান্নামে প্রবেশ করবে লাঞ্ছিত হয়ে। (আল-মুমিন : ৬০)
এ আয়াতে প্রমাণিত হল, যারা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে না তারা অহংকারী। অতএব প্রার্থনা করলে অহংকার থেকে মুক্ত থাকা যাবে।ইমাম শাওকানী রহ. বলেন : এ আয়াত স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে দুআ অন্যতম ইবাদত। আর এটা পরিহার করা আল্লাহর সঙ্গে অহংকার করার নামান্তর। এ অহংকারের চেয়ে নিকৃষ্ট কোনো অহংকার হতে পারে না। কিভাবে মানুষ আল্লাহর সঙ্গে অহংকার করতে পারে যে আল্লাহ তাকে সৃষ্টি করেছেন, তাকে সব ধরনের জীবনোপকরণ দিয়েছেন, যিনি জীবন দান করেন ও মৃত্যু ঘটান এবং ভাল-মন্দের প্রতিদান দিয়ে থাকেন ? (তুহফাতুয যাকিরীন : আশ-শাওকানী) ৩-দুআ কখনো বৃথা যায় না যেমন হাদীসে এসেছে :আবু সাঈদ খুদরী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : যখন কোনো মুমিন ব্যক্তি দুআ করে, যে দুআতে কোনো পাপ থাকে না ও আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার বিষয় থাকে না, তাহলে আল্লাহ তিন পদ্ধতির কোনো এক পদ্ধতিতে তার দুআ অবশ্যই কবুল করে নেন। যে দুআ সে করেছে হুবহু সেভাবে তা কবুল করেন অথবা তার দুআর প্রতিদান আখেরাতের জন্য সংরক্ষণ করেন কিংবা এ দুআর মাধ্যমে তার ওপর আগত কোনো বিপদ তিনি দূর করে দেন। এ কথা শুনে সাহাবিগণ বললেন, আমরা তাহলে অধিক পরিমাণে দুআ করতে থাকবো। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন : তোমরা যত প্রার্থনাই করবে আল্লাহ তার চেয়ে অনেক বেশি কবুল করতে পারেন। (বুখারী : আল-আদাবুল মুফরাদ ও আহমদ)এ হাদীসে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে কোনো মুসলিম ব্যক্তির দুআ কখনো বৃথা যায় না। দুআ ও মুনাজাতের আদবআপনি দেখবেন কোনো মানুষ যখন কারো কাছে কিছু চায় তখন আদব-কায়দা বা শিষ্টাচারের সঙ্গেই তা চায়। সে নিজের কথা সুন্দর করে, উপস্থপনা পদ্ধতি আকর্ষণীয় করার চেষ্টা করে। এমনিভাবে দরখাস্ত যত গুরুত্বপূর্ণ হবে তার আদব ও উপস্থাপনা ততই সুন্দর ও মার্জিত করা হয়। এ সকল প্রচেষ্টার উদ্দেশ্য একটাই থাকে, তাহল, সে যা আবেদন করেছে তা যেন পায়।আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের চেয়ে এমন বড় সত্তা কে আছে যার কাছে আদব-কায়দা ও পূর্ণ শিষ্টাচারসহ প্রার্থনা করা যেতে পারে? অপরদিকে দুআ-মুনাজাত যখন সর্বশ্রেষ্ট ইবাদত তখন অবশ্যই এটা আদায় করতে তার যত বিধি-বিধান, শর্তাবলী, নিয়ম-কানুন, শিষ্টাচার আছে, তার সবই পালন করতে হবে। লক্ষ্য থাকবে যে, আমার এ প্রার্থনা যেন আল্লাহর কাছে কবুল হয়।প্রার্থনার একটি শর্ত হল, এটা শুধুমাত্র আল্লাহর কাছে ও তাঁরই উদ্দেশ্যে নিবেদিত হবে। আল্লাহর সঙ্গে দুআর সময় অন্য কোনো কিছুকে অংশীদার করা যাবে না। যেমন করে থাকে খ্রিস্টান ও মুশরিকরা। তারা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করতে যেয়ে যিশু ও অন্যান্য দেব-দেবীকে আহ্বান করে। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন :এবং এ মসজিদসমূহ আল্লাহর জন্য। সুতরাং আল্লাহর সঙ্গে তোমরা অন্য কাউকে ডাকবে না। (আল-জিন : ১৮) আল্লাহ তাআলা আরো বলেন :বল, তোমরা ভেবে দেখ যে, আল্লাহর শাস্তি তোমাদের ওপর আপতিত হলে অথবা তোমাদের নিকট কিয়ামত উপস্থিত হলে তোমরা কি আল্লাহ ব্যতীত অন্য কাউকে ডাকবে, যদি তোমরা সত্যবাদী হও? (আল-আনআম: ৪০) যখন বিপদকালে আমরা তাকে ছাড়া অন্য কাউকে ডাকি না তখন নিরাপদ সময়ে তাকে ছাড়া অন্যকে ডাকব কেন, বিপদের সময় যিনি একাই সাহায্য করতে পারেন তিনি কি অন্য সময় একা সাহায্য করতে পারেন না? তাহলে তখন কেন তার সঙ্গে অন্যকে শরীক করা হবে?আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন :আল্লাহ ব্যতীত তোমরা যাদের আহ্বান কর তারা তো তোমাদেরই মত বান্দা। (আল-আরাফ : ১৯৪) আল্লাহ আরো বলেন :আল্লাহ ব্যতীত তোমরা যাকে আহ্বান কর তারা তো তোমাদের সাহায্য করতে পারে না এবং নিজেদেরও নয়। (আল-আরাফ : ১৯৭) এ সকল আয়াতে আল্লাহ ব্যতীত কথাটি দ্বারা ওই সকল বস্তু ও ব্যক্তিকে বুঝানো হয়েছে যাদের কাছে প্রার্থনা করা হয়। হোক তা গাছ-পালা, পাহাড়-পর্বত, চাঁদ-সূর্য, আগুন, নবী, অলী, পীর, দেব-দেবী ও প্রতিমা ইত্যাদি।রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর চাচাতো ভাই ইবনে আব্বাস রা. কে নছীহত করেছিলেন :হে খোকা! আমি তোমাকে কয়েকটি কথা শিক্ষা দেব : আল্লাহকে হেফাজত কর আল্লাহ তোমাকে রক্ষা করবেন। আল্লাহকে হেফাজত কর, তুমি তাকে সামনে পাবে। যখন প্রার্থনা করবে তখন আল্লাহর কাছেই প্রার্থনা করবে। যখন সাহায্য কামনা করবে তখন আল্লাহর কাছেই সাহায্য চাবে। জেনে রাখ! পুরো জাতি যদি তোমাকে উপকার করতে একত্র হয় তবুও তোমার কোনো উপকার করতে পারবে না, তবে আল্লাহ তোমার জন্য যা লিখে রেখেছেন। এমনিভাবে পুরো জাতি যদি তোমার ক্ষতি করার জন্য একত্র হয় তবুও তোমার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না, তবে আল্লাহ যা তোমার বিপক্ষে লিখে রেখেছেন। কলম উঠিয়ে নেয়া হয়েছে আর দফতর শুকিয়ে গেছে। (তিরমিজী) প্রার্থনাকারীকে রিয়া অর্থাৎ লোকদেখানো ভাবনা ও ছুমুআ অর্থাৎ সমাজে প্রচার ভাবনা থেকে সর্বদা মুক্ত থাকতে হবে। দুআ নিবেদন হতে হবে কেবলই আল্লাহর উদ্দেশ্যে।রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেই দিয়েছেন :যে মানুষকে শুনানোর জন্য কাজ করল আল্লাহ তা মানুষকে শুনিয়ে দেবেন। আর যে মানুষকে দেখানোর জন্য কাজ করল আল্লাহ তা মানুষকে দেখিয়ে দেবেন। (ফলে সে আল্লাহর কাছে এর কোনো বিনিময় পাবে না।) (বুখারী) দুআ করার আদবসমূহ ১- দুআ করার সময় তা কবুল হওয়ার ব্যাপারে এ দৃঢ় বিশ্বাস রাখা এবং দৃঢ়তার সঙ্গে দুআ করা :যদি আল্লাহ সম্পর্কে যথার্থ জ্ঞান থাকে তাঁর কুদরত, মহত্ত্ব, ওয়াদা পালনের প্রতি ঈমান থাকে তাহলে এ বিষয়টা আয়ত্ব করা সহজ হবে। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন :তোমাদের কেউ এ রকম বলবে না : হে আল্লাহ আপনি যদি চান তাহলে আমাকে ক্ষমা করে দিন। যদি আপনি চান তাহলে আমাকে অনুগ্রহ করুন। যদি আপনি চান তাহলে আমাকে জীবিকা দান করুন। বরং দৃঢ়তার সঙ্গে প্রার্থনা করবে এবং মনে রাখবে তিনি যা চান তা-ই করেন, তাকে কেউ বাধ্য করতে পারে না। (বুখারী) অর্থাৎ আল্লাহ যা ইচ্ছে করেন তা-ই করে থাকেন। তাই এভাবে প্রার্থনা বা মুনাজাত করার কোনো স্বার্থকতা নেই যে, আপনি চাইলে করেন। ঠিক এমনিভাবে তার কাছে দৃঢ়তার সঙ্গে প্রার্থনা করলে তাকে বাধ্য করা হয় না। কেননা তাকে কেউ বাধ্য করতে পারে না। এটা প্রার্থনাকারীসহ সকলে জানে।রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেন : প্রার্থনা কবুল হবে এ দৃঢ় বিশ্বাস রেখে তোমরা প্রার্থনা করবে। এবং জেনে রাখ আল্লাহ কোনো উদাসীন অন্তরের প্রার্থনা কবুল করেন না। (তিরমিজী, হাকেম) ২-বিনয় ও একাগ্রতার সঙ্গে দুআ করা এবং আল্লাহর অনুগ্রহ লাভ ও তার শাস্তি থেকে বাঁচার প্রবল আগ্রহ নিয়ে দুআ করা :আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন :তোমরা বিনীতভাবে ও গোপনে তোমাদের প্রতিপালকের কাছে দুআ করবে। (আল-আরাফ : ৫৫) আল্লাহ তাআলা বলেন : তারা সৎকর্মে প্রতিযোগিতা করে ও তারা আমার কাছে প্রার্থনা করে আশা ও ভীতির সঙ্গে এবং তারা থাকে আমার নিকট বিনীত। (আল-আম্বিয়া : ৯০) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুআর সময় বিনয়, ভীতি ও আশা নিয়ে কিভাবে দুআ করতেন তার একটি ছোট দৃষ্টান্ত এ হাদীসে দেখা যায় :আব্দুল্লাহ বিন আমর রা. থেকে বর্ণিত যে, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইবরাহীম আ. এর দুআ সম্পর্কে কুরআনের এ আয়াতটি তেলাওয়াত করলেন, হে আমার প্রতিপালক! এ সকল প্রতিমা তো বহু মানুষকে বিভ্রান্ত করেছে। সুতরাং যে আমার অনুসরণ করবে সে আমার দলভুক্ত।’ এবং তিনি ঈসা আ. এর দুআ সম্পর্কিত কুরআনের এ আয়াতটিও তেলাওয়াত করলেন, ‘তুমি যদি তাদের শাস্তি দাও তবে তারা তো তোমারই বান্দা, আর যদি তাদেরকে ক্ষমা কর, তবে তুমি তো পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।’ তিনি দু’হাত উপরে তুললেন এবং বললেন, ‘হে আল্লাহ! আমার উম্মত! আমার উম্মত!!’ এবং তিনি কাঁদলেন। আল্লাহ বললেন, হে জিবরীল! তুমি মুহাম্মাদের কাছে যাও, জিজ্ঞেস কর-অবশ্য তোমরা প্রভু ভাল জানেন- তাকে কিসে কাঁদিয়েছে। জিবরীল আসলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বললেন তার কাঁদার কারণ -আল্লাহ তো অবশ্যই জানেন-। আল্লাহ বললেন, হে জিবরীল, তুমি মুহাম্মদের কাছে যাও এবং বল, আমি অবশ্যই তার উম্মতের ব্যাপারে তাকে সন্তুষ্ট করব, তাকে এ ব্যাপারে অসম্মান করব না। (মুসলিম)
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন