আমাদের করার কিছুই নেই ?
জলছে আরকান
নির্বিকার বাংলাদেশ ও মুসলিম বিশ্ব
আরাকানে আবার মুসলিম নিধনযজ্ঞ শুরু হয়েছে। শুরু হয়েছে বলাটা
মনে হয় যথাযথ না। কারণ, আরাকানে মুসলিম নির্যাতন
একটি অব্যাহত ব্যাপার। শতাব্দীকাল যাবৎ চলছে এই নিধনÑনির্যাতন।
তবে সাম্প্রতিককালের এ জুলুম জ্বলন্ত আগুনে
হঠাৎ লেলিহান শিখা জ্বলে ওঠার মতো ঘটনা। মুসলমানগণ তাদের ওপর চালিত একটি অন্যায় আচরণের
প্রতিবাদ করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় শক্তির তত্ত্বাবধানে
ঠাণ্ডা মাথায় খুন ও হত্যাযজ্ঞ চালানো হচ্ছে। সরকারি এই জুলুমের মুখে রোহিঙ্গার মুসলিম
জনগোষ্ঠী আজ নিজ দেশেই পরবাসী। মানবতা সেখানে ডুকরে কাঁদছে। পদদলিত হচ্ছে মানবাধিকার। অথচ এ ক্ষেত্রে
নির্বিকার পার্শ্ববর্তী দেশ বাংলাদেশ। নির্বিকার মুসলিম বিশ্ব। মুসলিম রাষ্ট্রগুলো নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। আর বাংলাদেশের
পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় একদিকে যে কোনো মূল্যে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ প্রতিরোধের হুঙ্কার
ছাড়ছে, অপর দিকে স্তুতি গাইছে
মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের। নিরবে কাঁদছে রাসূলে আকরাম
সা. এর বাণী- ‘মুসলিমগণ এক দেহের
ন্যায়। তার যে কোনো অঙ্গে আঘাত লাগলে সারা দেহ অস্থির হয়ে পরে।’
মুসলিম নামধারীরা আজ ধর্মনিরপেক্ষ। তাই তারা যে কোনো
প্রতিক্রিয়া দেখাতে কিংবা ভূমিকা রাখতে শতর্ক
থাকছেÑ কোনোভাবেই যেনো
ইসলামের দিকে বা মুসলমানদের প্রতি বাড়তি আকর্ষণ প্রকাশ না পায়। কিংবা জাতীয় ও
রাষ্ট্রীয় জীবনে মুসলিম পরিচয়ের প্রকাশ না ঘটে। নিজেদের ধর্ম নিরপেক্ষ
চরিত্র ঠিক রাখতে গিয়ে মানবিকতার যদি কিছুটা ব্যাঘাত ঘটে ঘটুক বা মানবাধিকার পিষ্ট
হয় পদতলে; হোক তাতে কি? কেউ তো আর ‘ইসলামপন্থী’ বলে গালি দিবে না। একদিকে বাংলাদেশের হলো এই দশা।
আর মুসলিম বিশ্বের প্রতিনিধিত্বশীল ফোরামগুলোও
চুপ করে বসে আছে, যেনো ভাবখানা
অনেকটা এমন ‘মানবাধিকার বিষয়ে কথা বলা তো পশ্চিমাদের দায়িত্ব’!
প্রকৃত পক্ষে মুসলমান যখন জীবনের কোনো
ক্ষেত্রে ইসলাম থেকে সরে যায়, তখন সে শুধু ইসলাম
থেকেই বিচ্যুত হয় না; বরং সার্বিকভাবে
কল্যাণ থেকে সম্পর্কচ্যুত হয়ে যায়। মুসলিম জাহান যখন থেকে রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে ইসলামকে বাদ
দিয়ে নানা মতবাদের অনুসারি হয়েছেÑতখন থেকেই এরা এক
অপদার্থ জাতিতে পরিণত হয়েছে। যেই মুসলিমের কর্ণকুহরে আল্লাহর শাশ্বত কালামের বাণী
পৌঁছেনা, রাসূলে আরাবি সা. এর
নির্দেশবাণী শুনতে পায় না, তার কানে মানবতার
আর্তনাদ পৌঁছবে এমন আশা করা বোকামি বৈ কি?
মনে রাখতে হবে আজ ও আগামীর বিশ্ব দুই ভাগে
বিভক্ত। মুসলিম ও অমুসলিম। যারা মুসলিম হবে তারাই কপটতামুক্ত মানবতার পক্ষাবলম্বী হবে। তারাই হবে মজলুমের
বন্ধু। আর যারা ইসলামের অনুসারী হবে না তাদের কথা যতো শ্র“তিমধুরই হোক না
কেন, তারা তেলের দেশে
মানবাধিকার লঙ্ঘন হতে দেখবে। কিংবা স্বার্থের দেশে লড়াকু হবে আর প্রকৃত মানবতা হবে কেবল
তাদের পদতলের বস্তু।
তাই,
হে
মুসলিম! আগে মুসলিম হও। ব্যক্তি জীবনে,
সমাজ
জীবনে রাষ্ট্র ও রাজনৈতিক জীবনে। তবেই তোমরা মুক্তি পাবে, মানবতা হাসবে মুক্তির জয়গানে। অন্যথায় আজ কাদছে আরাকান, কাশ্মীর,
ফিলিস্তীন। কাল কাঁদবে আরো
নতুন নতুন মজলুমের জনবসতী
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন