তথাকথিত আহলে হাদীস ও তাদের কিছু জয়ীফ আমল ।
তথাকথিত আহলে হাদীস ও তাদের কিছু জয়ীফ আমল আমাদের জবাব-২
৬ নং: :
উনি বলেছেন..
৪) বুকের উপর হাত রাখাঃ
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) নামাযে
দাঁড়ানো অবস্থায় ডান হাত বাম হাতের উপর রেখে বুকের উপর স্থাপন করতেন।
(আবু দাউদ-নাসাঈ) বুকের উপর হাত রাখাটাই ছহীহ হাদীছ দ্বারা সাব্যস্ত।
এছাড়া অন্য কোথাও রাখার হাদীছ হয় দুর্বল, না হয় ভিত্তিহীন।
এ জবাব:
আমার এক ভাই বুকের উপর হাত বাঁধা সংক্রান্ত একটি পোষ্ট দেখে অবাক হয়ে গেলাম। তিনি লিখেছেন-
সালাতে নাভির নীচে হাত বাঁধার কথা সহীহ হাদীসে নেই। বরং হাত বুকের উপর বাঁধার কথা সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত।
সাহ্ল বিন সা’দ (রাযীঃ) হতে
বর্ণিত, তিনি বলেনঃ সালাতে লোকদেরকে ডান হাত বাম হাতের বাহুর উপর স্থাপন
করার নির্দেশ দেয়া হত। (বুখারী-১ম খণ্ড, আল-মাদানী প্রঃ হাঃ ৭৪০, পৃঃ ২৮৩,
১ম খণ্ড, তাঃ পাঃ হাঃ ৭৪০, পৃঃ ৩৫৭-৩৬০, ইঃ ফাঃ, হাঃ ৭০৪, আঃ প্রঃ, হাঃ
৬৯৬)
ওয়াইল বিন হুজল (রাযীঃ) হতে
বর্ণিত, তিনি বলেন যে, আমি নাবী (সঃ) এর সাথে সালাত আদায় করেছি। (আমি
দেখেছি) নাবী (সঃ) স্বীয় ডান হাত বাম হাতের উপর রেখে বুকের উপর রাখলেন।
(সহীহঃ ইবনু খাযাইমাহ্- ২০ পৃঃ; বুখারী- ১০২ পৃঃ, ১ম খণ্ড, আযীযল হক্ব, হাঃ
৪৩৫, ১ম খণ্ড, আঃ প্রঃ, হাঃ ৬৯৬, ২য় খণ্ড, ইঃ ফাঃ, হাঃ ৭০৪, ১ম খণ্ড,
আল-মাদানী প্রঃ হাঃ ৭৪০, পৃঃ ২৮৩, ১ম খণ্ড, তাঃ পাঃ হাঃ ৭৪০, পৃঃ ৩৫৭-৩৬০;
মুসলিম- ১৭৩ পৃঃ, ২য় খণ্ড, ইঃ ফঃ, হঃ ৮১; আবূ দাঊদ- ১ম খণ্ড, আল-মাদানী
প্রঃ হাঃ ৭২৩, পৃঃ ৪৬৫-৪৬৬। হাঃ ৭২৬, পৃঃ ৪৬৭, ১ম খণ্ড, ইঃ ফঃ, হাঃ ৭৫৯;
সহীহঃ আত্-তিরমিযী- ১ম খণ্ড, আল-মাদানী প্রঃ হাঃ ২৫২, পৃঃ ২৩০; নাসাঈ- ১৪১
পৃঃ; ইবনু মাজাহ্- ৫৮, ৫৯ পৃঃ; মিশকাত- ৭৫ পৃঃ, ২য় খণ্ড, নূর মুহাম্মাদ
আযমী, মাদ্রাসা পাঠ্য, হাঃ ৭৪১, ৭৪২; মুয়াত্তা মালিক- ১৭৪ পৃঃ; মুয়াত্তা
মুহাম্মাদ- ১৬০ পৃঃ; যদুল মায়াদ- ১২৯ পৃঃ; হিদায়া দিরায়াহ-১০১ পৃঃ;
কিমিয়ায়ে সআদাত- ১ম খণ্ড, ১৮৯ পৃঃ; বুলূগুল মারাম- আল-মাদানী প্রঃ হাঃ
২৭৮, পৃঃ ৮০)
এর উত্তর হল-
আবদুর রউফ ভাই বলেছেন- সালাতে হাত বাধার কথা সহীহ হাদীসে নেই। বরং বুকের উপর বাধার কথা সহীহ হাদীসে আছে।
তিনি প্রমান পেশ করেছেন বুখারীর
এই হাদীস হযরত সাহল ইবনে সাদ (রা) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন নামাজে লোকদেরকে
ডান হাত বাম হাতের বাহুর উপর স্থাপন করার নির্দেশ দেয়া হত।
আবদুর রউফ ভাই এবং যারা এ
সম্পর্কে ভ্রান্তিতে আছেন তাদের বলছি, এই হাদীসের কোন শব্দ দ্বারা আপনি
প্রমান পেলেন যে হাত বুকের উপর বাধা হত ? দয়া করে জানাবেন।
বরং এই হাদীস কোনভাবেই হাত বুকের উপর বাধার সামান্যতম প্রমান নেই।
এরপর তিনি (আবদুর রউফ
ভাই)একটি মুনকার হাদীস পেশ করেছেন। হাদীসটি হল ওয়াইল বিন হুজর(রা) থেকে
বর্নিত, তিনি বলেন, “আমি নবী করিম (সা) এর সাথে সালাত আদায় করেছি। (আমি
দেখেছি) নবী (সা) স্বীয় ডান হাত বাম হাতের উপর রেখে বুকের উপর রাখলেন।”
এর পর আবদুর রউফ ভাই রেফারেন্স পেশ করেছেন:
১. বুখারী। হাদীসটি বুখারী শরীফে
নেই। যে কেউ চাইলে বুখারী শরীফ খুলে দেখুন। বরং ইমাম বুখারী এই হাদীসের
রাবী মুয়াম্মেল ইবন ইসমাঈলকে মুনকারুল হাদীস বলেছেন (মুনকার হাদীস জাল বা
বানোয়াট হাদীসের সবচেয়ে নিকটবতী )। এতএব ইমাম বুখারীর মত অনুযায়ী
হাদীসটি মুনকার। এবং আল্লাম ইবনুল কায়্যিম (র) যিনি ইমাম ইবনে তাইমিয়া
(র) এর শিষ্য তিনি ইলামুল মুয়াককিয়ীন গ্রন্থে বলেছেন বুকের উপর হাত বাধার
কথাটুকু মুয়াম্মেল ইবন ইসমাঈল নামক রাবীর নিজস্ব বৃদ্ধি। এতএব আল্লামা
ইবনুল কায়্যিমের মত অনুযায়ী হাদীসটি মাউযু (বানোয়াট)। এতএব এই হাদীসটি
মাউযু (বানোয়াট) কমপক্ষে মুনকার ।
তাছাড়া সুফইয়ান সাউরীর অন্যান্য শিষ্যরা তাদের বর্নিত হাদীসে এই অংশটি উল্লেখ করেননি।
২.মুসলিম।মুসলিম শরীফের এ বিষয়ে হাদীস আছে কিন্তু তাতে বুকের উপর কথাটি নেই।
তাহলে বুখারী এবং মুসলিমের রেফারেন্স কেন দেয়া হল ?
৩. আত তিরমীযি। তিরমিযী শরীফে
হাত বাধার বিষয়ে বর্নিত হাদীসটি হল : কুতায়বা (র)……. কাবীসা ইবন হুলব তার
পিতা হুলব (রা)থেকে বর্ননা করেন যে, তিনি বলেন : “রাসূল (সা) যখন আমাদের
ইমামত করতেন তখন ডান হাত দিয়ে তার বাম হাত ধারন করতেন।”
এই বিষয়ে ওয়াইল ইবন হুজর, গুতায়ফ ইবনুল হারিছ, ইবন আব্বাস,ইবন মাসউদ ও সাহল ইবন সাদ (রা) থেকে হাদীস বর্নিত আছে।
ইমাম আবু ঈসা তিরমিযী (র) বলেন হুলব বর্নিত হাদীসটি হাসান।
সাহাবী তাবিঈ ও পরবতী যুগের
আলিমগন এই হাদীস অনুসারেই আমল করেছেন। তারা সালাতে বাম হাতের উপর ডান হাত
রাখার অভিমত ব্যক্ত করেছেন। কেউ কেউ উভয় হাত নাভীর উপর স্থাপন করার আর কেউ
কেউ নাভীর নীচে স্থাপন করার অভিমত দিয়েছেন। তবে আলিমগনের নিকট উভয়
সুরতেরই অবকাশ রয়েছে।
হুলব (রা) এর নাম হল ইয়াযীদ ইবন কুনাফা আত তাঈ। (তিরমীযি হাদীস নং ২৫২)
আমি হাদীসটি আপনার নিকট হুবুহু
উপস্থাপন করলাম। বলূনতো হাদীসটির কোন শব্দে বুকের উপর কথাটি আছে? তবে
তিরমিযীর রেফারেন্স কেন দেয়া হল ?
৪. নাসঈ শরীফ : নাসাঈ শরীফে
সালাতে বাম হাতের উপর ডান হাত রাখার স্থান নামক অনুচ্ছেদে ওয়ায়িল ইবন
হুজর (রা)থেকে বর্নিত হাদীসের কোথাও বুকের উপর কথাটি নেই।
তাহলে কেন বুকের উপর হাত বাধার ব্যাপারে নাসাঈ শরীফের রেফারেন্স দেয়া হল ?
এভাবে রেফারেন্স দেখে পাঠক নিশ্চয় ধোকা খাবে। তাই আমি অনুরোধ জানাব আবদুর রউফ ভাইকে এভাবে রেফারেন্স না দেয়ার।
বুকের উপর হাত বাধার কথা বুখারী মুসলিম তিরমিযী এবং নাসাঈ শরীফে নেই।
আবু দাউদ ও ইবন মাজাহতে আছে যার বর্ননা অত্যন্ত দুর্বল।
আবু দাউদের বর্ননা :
আমাদের নিকট বর্ননা করেছেন আবু
তাওবা থেকে আলহায়সামু অর্থাত ইবন হুমায়দ থেকে সাওরী থেকে সুলায়মান বিন
মুসা থেকে তাউস (র) তিনি বলেন রাসূল (সা) নামাজরত অবস্থায় ডান হাত বাম
হাতের উপর স্থাপন করে তা নিজের বুকের উপর বেধে রাখতেন।
প্রথমত : হাদীসটি মুরসাল। এবং
অধিকাংশ মুহাদ্দিসের মতে মুরসাল হাদীস যঈফ মারদুদ (দুবল ও বর্জনীয় )। এবং
যেহেতু ফিকহের ক্ষেত্রেও আপনারা মুহাদ্দিসেকিরামের মত প্রাধান্য দিচ্ছেন
তাই আপনারা এই হাদীস দিয়ে দলীল দিতে পারেন না। এবং দলীল দিতে চাইলেও বলতে
হবে হাদীসটি যঈফ। কেননা এটি মুরসাল হাদীস।
তাহলে কিভাবে একটি যঈফ ও মারদুদ (দু্বর্ল ও বজর্ণীয়) হাদীসকে সহীহ বলার অপচেষ্টা করা হল ? স্পষ্ট করে বলূন কিভাবে এটি সহীহ হাদীস ?
দ্বিতীয়ত : হাদীসটির রাবী
(বর্ননাকারী) সুলায়মান বিন মুসা মৃত্যুর পূবে স্মৃতিশক্তি লোপজনিত
দূবলতায় পড়েছিলেন। তাই তার হাদীস আর সহীহ থাকেনি।
তৃতীয়ত : হাদীসটির সনদ খেয়াল করুন সেখানে বলা হচ্ছে সাওরী থেকে সুলায়মান বিন মুসা। অথচ সাওরী(র) এর মত হল নাভীর নিচে হাত বাধা।
চতুর্থত : আবু দাউদ তার
মারাসীলেএ্ই হাদীসাটি সংকলন করেছেন কিন্তু তাতে ছুম্মা ইয়াশুদ্ধু
বায়নাহুমা এর স্থলে রয়েছে ছুম্মা ইয়াসবিকু বিহিমা আলা সদরিহি।
এতএব আবু দাউদ গ্রন্থে থাকা
বুকের উপর হাত বাধার একটিমাত্র হাদীস তাতেও আবার যঈফের বহু কারন বিদ্যমান।
এতএব সমস্ত দিক বিবেচনায় হাদীসটি আবু দাউদের নাভীর নীচে হাত বাধার হাদীসের
চেয়ে অধিক দূবল।
এবার আমরা ইবনে মাজাহর হাদীসটি পর্যালোচনা করব : আসুন আমরা হাদীসটি বিভিন্ন গ্র্রন্থে সনদ সহ দেখি :
সুনানে ইবনে মাজাহ হাদীস নং ৮০৯ :
আমাদেরকে বর্ননা করেছেন উসমান
ইবন্আবী শায়বা আমাদের বর্ননা করেছেন আবুল আহওয়াস থেকে সিমাক বিন হারব
থেকে কাবীসা বিন হালব থেকে তার পিতা তিনি বলেন : নবী (সা) আমাদের সালাতে
ইমামতি করতেন এবং তিনি তার ডান হাত দিয়ে বাম হাত ধরতেন।
কাবীসাহ ইবন হালব থেকে তার পিতা
বলেন রাসূল (সা) কে আমি তার ডান দিক থেকে এবং বাম দিক থেকে ফিরে যেতে
দেখেছি। আর তাকে দেখেছি এটিকে (হাতকে) তার বুকের উপর রাখতে।
হাদীসটি আরো বর্নিত হয়েছে দারা কুতনীতে কিন্তু তাতে বুকের উপর অংশটি নেই।
আর তিরমিযী ও মুসনাদে আহমাদেও হাদীসটি বর্নিত হয়েছে তাতে বুকের উপর অংশটি নেই।
এবং হালব এর হাদীসটি সিমাক বিন
হারব এককভাবে বর্ননা করেছেন। অর্থাত রাবী সিমাক একক সকল বর্ননায়। আর
একাধিক জারাহ তাদীলের্ ইমাম তাকে শিথিল (দুর্বল) বলেছেন। আর নাসাই বলেছেন
তিনি যদি কোন মূল মতন এককভাবে বণনা করে তাহলে তা দলীল হবে না। কারন তাকে
যুগিয়ে দেয়া হত আর তিনি যোগান গ্রহন করতেন (মীযানুল ইতিদাল খ ২ পৃ২৩২)
এতএব আমরা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি যে বুখারী মুসলিম তিরমিযী নাসঈ এর কোনটি্েই বুকের উপর হাত বাধার ব্যাপারে কোন হাদীস নেই।
আবু দাউদ এবং ইবন মাজাহতে আছে যা
অত্যন্ত দূবল। এবং এই দুবর্লতার কারন দেয়া হল। এবং ইবনে খুযায়মার বর্ণনা
জাল (বানোয়াট) কমপক্ষে মুনকার যা জাল বা মাউযুর কাছাকাছি।
এবং আবদুর রউফ ভাই ব্লগারদের যে
বিভ্রান্ত করেছেন (যেমন তিনি রেফারেন্স দিয়েছেন বুখারী , মুসলিম, তিরমীযী
ইত্যাদী। তিনি রেফারেন্স দিয়েছেন যেমন বুখারী ১০২ পৃ: প্র: খ: আযীযল হক।
হা: ৪৩৫ ১ম খ: আ: প্র: হা: ৬৯৬ । অর্থাত তিনি বুঝিয়েছেন বুখারী শরীফের ১০২
পৃষ্ঠা প্রথম খন্ড আযীযল হক। হাশিয়া (ব্যাখ্যা)৪৩৫, ১ম খন্ড আ: প্রকাশনী
হাশিয়া (ব্যাখ্যা) ৬৯৬। অর্থাত তিনি হাদীসের রেফারেন্স দিচ্ছেন হাদীস
গ্রন্থের তাদের মতমত ব্যাখ্যা গ্রন্থ দিয়ে। অথচ স্বাভাবিকভাবে ব্রগাররা
ভাববে তিনি বোধ হয় হাদীস গ্রন্থের রেফারেন্স দিয়েছেন। আর এভাবেই ধোকা
খাবে ব্লগারগন। )তাই আমি ভাইকে অনুরোধ জানাব এভাবে রেফারেন্স না দিয়ে
স্পষ্ট লিখে দিবেন ব্যাখ্যাগ্রন্থ। তা না হলে আপনি না চাওয়া সত্বেও পাঠক
ধোকা খাবে যার দায় আপনি এড়াতে পারেন না। আমার কথায় কষ্ট পেয়ে থাকলে
আন্তরিকভাবে দু:খিত। নি:সন্দেহে মুমিনরা পরষ্পর ভাই। ক্ষমা সুন্দর দষ্টিতে
দেখবেন।আল্লাহ আমাদের সহীহ বুঝার তেৌফিক দান করুন।
নামাযে হাত বাধার নিয়ম :
প্রশ্ন : কিছুদিন আগে আমার এক
বন্ধুর সাথে নামাযের নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা হচ্ছিল। তিনি বললেন, ‘নামাযে
বুকের উপর হাত রাখা সুন্নাহ। হাদীস শরীফে এই নিয়মটিই আছে। অন্য কোনো নিয়ম
নেই। সহীহ বুখারীতে সাহল ইবনে সাদ রা. থেকে বর্ণিত হাদীসে, সহীহ ইবনে
খুযায়মায় ওয়াইল ইবনে হুজর রা. থেকে বর্ণিত হাদীসে এবং মুসনাদে আহমদে
হুলব আতত্বয়ী রা. থেকে বর্ণিত হাদীসে বুকের উপর হাত বাঁধার কথা আছে।
এছাড়া তাউস রাহ. থেকে একটি মুরসাল হাদীসে এবং হযরত আলী রা. থেকে সূরায়ে
কাওসারের তাফসীরে নামাযে বুকের উপর হাত বাঁধার কথা বর্ণিত হয়েছে।
‘পক্ষান্তরে নাভীর নীচে হাত বাঁধার কোনো প্রমাণ সহীহ হাদীসে নেই। এ সম্পর্কে যত হাদীস ও আছার আছে সব জয়ীফ।’
আমার বন্ধুটি একজন আলেম। আমারও উলূমুল হাদীস বিষয়ে কিছু পড়াশোনা আছে। তার সাথে আলোচনার পর আমি বিষয়টির উপর কিছু পড়াশোনাও করেছি।
নামাযে হাত বাঁধার বিষয়ে একটি
পূর্ণাঙ্গ আলোচনা এবং উপরোক্ত বিষয়ে ইলমী সমাধান আপনাদের নিকট কামনা
করছি। আল্লাহ তাআলা আপনাদের জাযায়ে খায়ের দান করুন।
রাইয়ান ইবনে লুৎফুর রহমান
পল্লবী, ঢাকা-১২১৬
উত্তর : নামাযে হাত বাঁধা
সুন্নত। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাযে হাত
বেঁধেছেন। তাঁর ডান হাত থাকত বাম হাতের কব্জির উপর। সাহাবায়ে কেরামকে
এভাবেই নামায পড়ার আদেশ করা হত এবং তাঁরাও এভাবেই হাত বেঁধে নামায পড়তেন।
নামাযে হাত বাঁধা
হযরত ওয়াইল ইবনে হুজর রা. থেকে
বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকবীর দিয়ে দুই হাত তুললেন।
রাবী বলেন, দুই কান বরাবর। এরপর পরিধানের চাদর গায়ে জড়িয়ে নিলেন, এরপর
ডান হাত বাম হাতের উপর রাখলেন …।
عن وائل بن حجر : أنه رأى النبي
صلى الله عليه وسلم رفع يديه حين دخل في الصلاة كبر، وصف همام حيال أذينه،
ثم التحف بثوبه، ثم وضع يده اليمنى على اليسرى …
-সহীহ মুসলিম ১/১৭৩
হযরত হুলব আতত্বয়ী রা. বলেন,
আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের ইমাম হতেন এবং তাঁর
ডান হাত দিয়ে বাম হাত ধরতেন।
كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يؤمنا فيأخذ شماله بيمينه. رواه الترمذي وقال : حديث حسن.
-জামে তিরমিযী ১/৩৪; ইবনে মাজাহ ৫৯
হযরত সাহল ইবনে সাদ রা. বলেন, লোকদেরকে আদেশ করা হত, পুরুষ যেন নামাযে ডান হাত বাম বাহুর উপর রাখে।’-সহীহ বুখারী ১/১০৪
كان الناس يؤمرون أن يضع الرجل
اليد اليمنى على ذراعه اليسرى في الصلاة. قال أبو حاتم : لا أعلمه إلا ينمى
ذلك إلى النبي صلى الله عليه وسلم.
হযরত জাবির রা. বলেন, আল্লাহর
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একজন নামাযরত ব্যক্তির নিকট দিয়ে
গমন করছিলেন, যিনি ডান হাতের উপর বাম হাত রেখে নামায পড়ছিলেন। আল্লাহর
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার হাত খুলে ডান হাত বাম হাতের উপর
রাখলেন।-মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ১৫০৯০
مر رسول الله صلى الله عليه وسلم
برجل وهو يصلي قد وضع يده اليسرى على اليمنى فانتزعها ووضع اليمنى على
اليسرى. قال الهيثمي في مجمع الزوائد ٢/٢۷٥ : رجاله رجال الصحيح.
আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা. বলেন,
আমি আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘আমরা
নবীগণ আদিষ্ট হয়েছি দ্রুত (সময় হওয়ামাত্র) ইফতার করতে, বিলম্বে (সময়ের
শেষের দিকে) সাহরী খেতে এবং নামাযে ডান হাত বাম হাতের উপর রাখতে।’
سمعت نبي الله صلى الله عليه
وسلم يقول : إنا معاشر الأنبياء أمرنا بتعجيل فطرنا وتأخير سحورنا وأن نضع
أيماننا على شمائلنا في الصلاة. قال الهيثمي في مجمع الزوائد ١/ ٢۷٥:
رجاله رجال الصحيح.
-সহীহ ইবনে হিববান ৩/১০১, হাদীস : ১৭৬৬; আলমুজামুল কাবীর ১১/১৫৯, হাদীস : ১১৪৮৫
হারিছ ইবনে গুতাইফ রা. বলেন,
‘আমি এটা ভুলিনি যে, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বাম
হাতের উপর ডান হাত রাখতে দেখেছি, অর্থাৎ নামাযে।’
مهما رأيت نسيت لم أنس أني رأيت رسول الله صلى الله عليه وسلم وضع يده اليمنى على اليسرى يعني : في الصلاة.
-মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ৩৯৫৬; মুসনাদে আহমদ ৪/১০৫, হাদীস : ১৬৯৬৭-৬৮, ২২৪৯৭
মোটকথা, নামাযে হাত বেঁধে
দাঁড়ানো সুন্নাহ। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে
অনেক সাহাবী তা বর্ণনা করেছেন। এ কারণে নামাযে হাত ছেড়ে দাঁড়ানো, যা
মালেকী মাযহাবের কোনো কোনো ইমাম গ্রহণ করেছেন, মূল সুন্নাহ নয়।
মালেকী মাযহাবের প্রাচীন গ্রন্থ
‘‘আলমুদাওয়ানাতুল কুবরা’’য় আছে, আবদুর রহমান ইবনুল কাসিম রাহ. ইমাম মালিক
রাহ. থেকে নামাযে ডান হাত বাম হাতের উপর রাখার বিষয়ে বর্ণনা করেছেন যে,
‘ফরয নামাযে এই নিয়ম আমার জানা নেই এবং তিনি তা অপছন্দ করতেন। তবে নফল
নামাযে কিয়াম যখন দীর্ঘ হয় তখন হাত বাঁধতে বাঁধা নেই।’
قال : وقال مالك في وضع اليمنى
على اليسرى في الصلاة قال : لا أعرف ذلك في الفريضة وكان يكرهه، ولكن في
النوافل إذا طال القيام فلا بأس بذلك يعين به نفسه.
কিন্তু এ রেওয়ায়েত উল্লেখ
করার পর সুহনূন (গ্রন্থকার) বলেন, ‘আবদুল্লাহ ইবনে ওয়াহব রাহ. সুফিয়ান
ছাওরী রাহ.-এর সূত্রে একাধিক সাহাবী থেকে বর্ণনা করেছেন যে, তাঁরা আল্লাহর
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নামাযে ডান হাত বাম হাতের উপর
রাখতে দেখেছেন।
قال سحنون عن ابن وهب عن سفيان
الثوري عن غير واحد من أصحاب رسول الله صلى الله عليه وسلم أنهم رأوا رسول
الله صلى الله عليه وسلم واضعا يده اليمنى على اليسرى في الصلاة.
-আলমুদাওয়ানাহ ১/৭৬
ইমাম মালেক রাহ.-এর অন্য অনেক
শাগরিদ তাঁর থেকে হাত বাঁধার নিয়ম বর্ণনা করেছেন। মালেকী মাযহাবের বিখ্যাত
মনীষীদের অনেকেই তাঁর এই রেওয়ায়েতকেই বিশুদ্ধ ও অগ্রগণ্য বলে সিদ্ধান্ত
দিয়েছেন।
ইমাম মালিক রাহ.-এর ‘আলমুয়াত্তা’য় এ নিয়মই বর্ণিত হয়েছে।
‘আততাজ ওয়াল ইকলীল লিমুখতাসারিল
খালীল’ কিতাবে ইমাম মালেক রাহ. থেকে হাত বাঁধার নিয়ম বর্ণনা করার পর ইবনে
রুশদ মালেকীর বক্তব্য উল্লেখ করা হয়েছে যে, ‘এটিই অগ্রগণ্য ও শক্তিশালী।
কারণ প্রথম যুগে মানুষকে এরই আদেশ করা হত।’
ابن رشد : وهذا هو الأظهر، لأن الناس كانوا يؤمرون به في الزمان الأول.
তদ্রূপ কাযী ইয়ায মালেকী রাহ.
থেকে বর্ণনা করা হয়েছে যে, আমাদের শায়খগণ ডান হাতের পাতা বাম হাতের
কব্জির উপর মুঠ করার নিয়মই গ্রহণ করেছেন।’
عياض : اختار شيوخنا قبض كف اليمنى على رسغ اليسرى.
-আততাজ ওয়াল ইকলীল, আবু আবদিল্লাহ মুহাম্মাদ ইবনে ইউসুফ আলমাওওয়াক আলমালেকী (৮৯৭ হি.) মাওয়াহিবুল জালীলের সাথে মুদ্রিত ২/২৪০
ইমাম কুরতুবী মালেকী রাহ.ও (৬৭১
হি.) হাত বাঁধার রেওয়ায়েতকে অগ্রগণ্য সাব্যস্ত করে বলেন, ‘এটিই সঠিক।
কারণ হযরত ওয়াইল রা. ও অন্যান্য সাহাবী বর্ণনা করেছেন যে, আল্লাহর রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ডান হাত বাম হাতের উপর রেখেছেন।’ -আলজামি
লিআহকামিল কুরআনিল কারীম ২০/১৫০ এ প্রসঙ্গে মালেকী মাযহাবের বিখ্যাত মনীষী
ইমাম ইবনে আবদুল বার রাহ. (৪৬৩ হি.) শক্তিশালী আলোচনা করেছেন। তিনি হাত
বাঁধার নিয়মকে শুধু অগ্রাধিকারই দেননি; বরং এর বিপরীতে ইমাম মালেক রাহ.
থেকে যা কিছু বর্ণনা করা হয় তা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় খন্ডনও করেছেন। তাঁর
আলোচনার কিছু অংশ মূল পাঠসহ তুলে দেওয়া হল।
তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে (নামাযে
ডান হাত বাম হাতের উপর রাখা) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে
ভিন্ন কিছু বর্ণিত হয়নি এবং কোনো সাহাবী এ নিয়মের বিরোধিতা করেছেন বলে
আমাদের জানা নেই। শুধু আবদুল্লাহ ইবনুয যুবায়ের রা. সম্পর্কে বর্ণনা করা
হয়, তিনি নামাযে হাত ছেড়ে রাখতেন, তবে এর বিপরীত কথাও তাঁর থেকে বর্ণিত
হয়েছে। ইতিপূর্বে আমরা তাঁর বক্তব্য উল্লেখ করেছি যে, ‘সুন্নাহ হচ্ছে ডান
হাত বাম হাতের উপর রাখা।’
জুমহূর তাবেয়ীন ও মুসলিম উম্মাহর আহলুর রায় ও আহলুল আছর উভয় ঘরানার অধিকাংশ ফকীহ এই নিয়মই গ্রহণ করেছেন।’
لم تختلف الآثار عن النبي صلى
الله عليه وسلم في هذا الباب ولا أعلم عن أحد من الصحابة في ذلك خلافا
الاشيء روي عن ابن الزبير أنه كان يرسل يديه إذا صلى وقد روى عنه خلافه مما
قدمنا ذكره عنه وذلك قوله صلى الله عليه وسلم (كذا) وضع اليمين على الشمال
من السنة، وعلى هذا جمهور التابعين وأكثر فقهاء المسلمين من أهل الرأي
والأثر.
-আততামহীদ ২০/৭৪-৭৫
তিনি আরো বলেন, ‘ইবনুল কাসিম
ছাড়া অন্যরা ইমাম মালেক রাহ. থেকে বর্ণনা করেছেন যে, ফরয-নফল কোনো নামাযেই
হাত বাঁধতে বাধা নেই। আর এটিই তাঁরা মদীনাবাসী শাগরিদদের বর্ণনা।’
… وقال عنه (أي عن مالك) غير ابن القاسم : لا بأس بذلك في الفريضة والنافلة، وهي رواية المدنيين عنه.
-প্রাগুক্ত
এরপর কোনো কোনো তাবেয়ী থেকে
নামাযে হাত ছেড়ে রাখার যে বর্ণনা পাওয়া যায় সে সম্পর্কে দীর্ঘ আলোচনার
পর তিনি বলেন, ‘এই হচ্ছে কতিপয় তাবেয়ীর (আমলের) কিছু বিবরণ। তবে তা
(আলোচিত সুন্নাহর) খিলাফ ও বিরোধিতা নয়। কারণ তাদের কেউ (হাত বাঁধা)
অপছন্দ করতেন এমনটা পাওয়া যায় না। আর পাওয়া গেলেও তা দলীল হিসেবে গ্রহণ
করা যেত না। কারণ সুন্নাহর অনুসারীদের জন্য সুন্নাহই হচ্ছে দলীল। আর যারা
এর বিরোধিতা করে তাদের বিরুদ্ধেও দলীল হচ্ছে সুন্নাহ, বিশেষত যে সুন্নাহয়
কোনো সাহাবীর ভিন্নমত নেই।
فهذا ما روي عن بعض التابعين في
هذا الباب وليس بخلاف، لأنه لا يثبت عن واحد منهم كراهية، ولو ثبت ذلك ما
كانت فيه حجة، لأن الحجة في السنة لمن اتبعها، ومن خالفها فهو محجوج بها،
ولا سيما سنة لم يثبت عن واحد من الصحابة خلافها.
-প্রাগুক্ত ২০/৭৬
তিনি আরো বলেন, ‘(হাত বাধার
ক্ষেত্রে) ফরয-নফলে পার্থক্য করার কোনো যুক্তি নেই, যদিও কেউ বলে থাকেন যে,
হাত বাঁধার নিয়মটি নফল নামাযের ক্ষেত্রে, ফরযের ক্ষেত্রে নয়। কারণ
আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাধারণত নফল নামায ঘরে
আদায় করতেন। সুতরাং এটা যদি তাঁর ঘরের নামাযের নিয়ম হত তাহলে তা বর্ণনা
করতেন তাঁর স্ত্রীগণ। কিন্তু তাঁরা এ বিষয়ে কিছুই বর্ণনা করেননি। যাঁরা
বর্ণনা করেছেন যে, আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাযে
ডান হাত বাম হাতের উপর রাখতেন তাঁরা তাঁর নিকট রাত্রিযাপন করতেন না এবং
তাঁর ঘরেও প্রবেশ করতেন না। তাঁরা তো তা-ই বর্ণনা করেছেন, যা তাঁকে করতে
দেখেছেন তাঁর পিছনে ফরয নামায আদায়ের সময়।’
وكذلك لا وجه للتفرقة بين
النافلة والفريضة، ولو قال قائل إن ذلك في الفريضة دون النافلة، لأن أكثر
ما كان يتنفل رسول الله صلى الله عليه وسلم في بيته ليلا، ولو فعل ذلك في
بيته لنقل عنه ذلك أزواجه ولم يأت عنهن في ذلك شيء، ومعلوم أن الذين رووا
عنه أنه كان يضع يمينه على يساره في صلاته لم يكونوا ممن يبيت عنده، ولا
يلج بيته، وإنما حكوا عنه ما رأوا منه في صلاتهم خلفه في الفرائض، والله
أعلم.
-প্রাগুক্ত ২০/৭৯
হাত কোথায় বাঁধা হবে
তো এতে কোনো সন্দেহ নেই যে,
আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাযে হাত বাঁধতেন এবং
সাহাবায়ে কেরামও হাত বাঁধতেন। এখন প্রশ্ন হল, কোথায় তাঁরা হাত বাঁধতেন?
মৌখিক বর্ণনায় হাত বাঁধার মূল প্রসঙ্গ যত পরিষ্কারভাবে এসেছে কোথায়
বাঁধতেন তা সেভাবে আসেনি। কেন আসেনি? আসার প্রয়োজন হয়নি। কারণ সবাই হাত
বাঁধছেন। কোথায় বাঁধছেন তা সবার সামনেই পরিষ্কার। কাজেই তা মুখে বর্ণনা
করার প্রয়োজন হয়নি। তো যে সুন্নাহ কর্মে ও অনুসরণে ব্যাপকভাবে রয়েছে তা
মৌখিক বর্ণনায় সেভাবে নেই। এ ধরনের ক্ষেত্রে পরের যুগের লোকদের জন্য
সাহাবা-তাবেয়ীনের আমল ও ফতোয়া সবিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ তাঁরা ঐ সময়ের
কর্ম ও অনুশীলনের প্রত্যক্ষদর্শী।
নামাযে হাত বাঁধার সুন্নাহর উপর সাহাবা-তাবেয়ীন কীভাবে আমল করেছেন-এ বিষয়ে ইমাম তিরমিযী রাহ. (২৭৯ হি.) বলেন-
والعمل على هذا عند أهل العلم من
أصحاب النبي صلى الله عليه وسلم والتابعين ومن بعدهم، يرون أن يضع الرجل
يمينه على شماله في الصلاة، ورأى بعضهم أن يضعهما فوق السرة، ورأى بعضهم أن
يضعهما تحت السرة، وكل ذلك واسع عندهم.
অর্থাৎ আহলে ইলম সাহাবা-তাবেয়ীন
ও তাঁদের পরবর্তী মনীষীগণ এই হাদীসের উপর (ডান হাত দ্বারা বাম হাত ধরা)
আমল করেছেন। তাঁদের সিদ্ধান্ত এই ছিল যে, নামাযে ডান হাত বাম হাতের উপর
রাখতে হবে। তাঁদের কেউ নাভীর উপর হাত রাখার কথা বলতেন, আর কেউ নাভীর নিচে
রাখাকে (অগ্রগণ্য) মনে করতেন। (তবে) দুটো নিয়মই তাঁদের কাছে গ্রহণযোগ্য
ছিল।-জামে তিরমিযী ১/৩৪
বস্ত্তত এটা হচ্ছে হাত বাঁধার
হাদীসসমূহের ব্যাখ্যা ও প্রায়োগিক পদ্ধতি। সাহাবা-তাবেয়ীনের যমানা থেকে এ
দুটি নিয়মই চলে আসছে। পরবর্তীতে জুমহূর ফকীহ ও মুজতাহিদ ইমামগণ এ দুই
নিয়ম গ্রহণ করেছেন। এভাবে উম্মাহর তাওয়ারুছ ও ব্যাপক চর্চার মাধ্যমে
নামাযে হাত বাঁধার যে নিয়ম প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে পৌঁছেছে তা
উল্লেখিত হাদীসসমূহেরই ব্যবহারিক রূপ। এ কারণে পরবর্তী যুগে বিচ্ছিন্ন কোনো
নিয়ম আবিষ্কার করে তাকে হাদীস শরীফের উপর আরোপ করা হাদীসের তাহরীফ ও
অপব্যাখ্যা ছাড়া আর কিছুই নয়।
নাভীর নিচে হাত বাঁধা
উপরোক্ত দুই নিয়মের মাঝে নাভীর
নিচে হাত বাঁধার নিয়মটি রেওয়ায়েতের বিচারে অগ্রগণ্য। ইমাম ইসহাক ইবনে
রাহুয়াহ রাহ. (২৩৮ হি.) বলেছেন, ‘নাভীর নিচে হাত বাঁধা রেওয়ায়েতের
বিচারে অধিক শক্তিশালী এবং ভক্তি ও বিনয়ের অধিক নিকটবর্তী।’
تحت السرة أقوى في الحديث تحت السرة أقوى في الحديث وأقرب إلى التواضع
তাবেয়ী আবু মিজলায লাহিক ইবনে
হুমাইদ রাহ. (মৃত্যু : ১০০ হি.-এর পর) নামাযে কোথায় হাত বাঁধবে-এ প্রশ্নের
উত্তরে বলেছেন, ‘ডান হাতের পাতা বাম হাতের পাতার পিঠের উপর নাভীর নিচে
রাখবে।’-মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ৩৯৬৩
এই রেওয়ায়েতের সনদ সহীহ।
(পরের ব্লগে দেখুন)
ei shomosto hadith birodhi lekha jara prosar korse tara ihudi, khrishtan der dalal, ha
উত্তরমুছুনHat buke badhar niom ami bukhari te sposhto dekhesi, amar kase ase, dekhte saile dekhabo. hat bukei badhte hobe.....
Jara hat navir nise badhe tara ei hadith ta ke kothai felbe ?????????
উত্তরমুছুনRAsul(SM) bolen "tomra komor borabor hat bedhona, borong shinar upor hat badhbe"
Vai shina ki navir nise Thake ?